ডায়াবেটিসেই সীমাবদ্ধ নয় বিপদ
গবেষণায় দেখা গেছে, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খাওয়ার ঝুঁকি শুধু ডায়াবেটিসেই থেমে থাকে না।
আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে—
নিয়মিত ভাজা খাবার খাওয়া হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বহুগুণে বাড়ায়।
অনেক ফ্রেঞ্চ ফ্রাই আবার ময়দা বা ব্রেডক্রাম্বে মোড়ানো থাকে, যা খাবারে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ অতিরিক্তভাবে বাড়িয়ে রক্তে শর্করা দ্রুত বাড়ায়।
পুষ্টিবিদ স্টেসি ক্রাউসিক পরামর্শ দিয়েছেন, “কম প্রক্রিয়াজাত, প্রাকৃতিক খাবার বেছে নিন এবং ভাজার বদলে স্বাস্থ্যকর রান্নার পদ্ধতি ব্যবহার করুন।”
সবাই কিন্তু আলুকে দোষারোপ করছেন না
বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করেন, আলু নয়, ভাজার প্রক্রিয়াই সমস্যার মূল কারণ।
ফিজিশিয়ানস কমিটি ফর রেসপনসিবল মেডিসিনের ড. হান্না কাহলিওভা জানিয়েছেন, সিদ্ধ আলু আসলে ওজন কমাতে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাসে সহায়ক হতে পারে।
ইরান, ফিনল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসে পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, যারা বেশি সিদ্ধ আলু খান, তাদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৫০%–এরও বেশি কম।
জনস্বাস্থ্য বার্তায় পরিবর্তনের আহ্বান
ড. মুসাভি মনে করেন, জনস্বাস্থ্য বার্তায় খাবারকে সরাসরি “ভালো” বা “খারাপ” হিসেবে চিহ্নিত না করে রান্নার পদ্ধতি ও স্বাস্থ্যকর বিকল্পের ওপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
গবেষণার অন্তর্ভুক্ত দুটি মেটা–অ্যানালাইসিসে ৫ লাখের বেশি মানুষ ও ৪৩ হাজার ডায়াবেটিস–সংক্রান্ত ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে—খাবারের মান অনেকাংশেই নির্ভর করে তা কীভাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে তার ওপর।
স্বাস্থ্য রক্ষায় করণীয়
গবেষণা ও বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী—
ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চিপসসহ তেলে ভাজা আলুর পরিমাণ কমান।
আলু খেতে চাইলে সিদ্ধ, বেক বা স্টিম করা বেছে নিন।
ক্ষতিকর তেলের বদলে অলিভ অয়েল বা স্বাস্থ্যকর রান্নার পদ্ধতি ব্যবহার করুন।
খাবারে সবজি, ডাল, পূর্ণ শস্য ও প্রাকৃতিক প্রোটিনের পরিমাণ বাড়ান।
সংক্ষেপে, আপনার ফ্রেঞ্চ ফ্রাই–প্রেম হয়তো মনের তৃপ্তি দেয়, কিন্তু শরীরের জন্য তা হতে পারে এক নীরব হুমকি। রান্নার পদ্ধতি পরিবর্তনই হতে পারে সুস্বাস্থ্য রক্ষার সবচেয়ে সহজ উপায়।