২০২৫ সালে কোথায় সবচেয়ে ভালো জীবনযাপন সম্ভব? জেনে নিন ৫ দেশ

২০২৫ সালে কোথায় সবচেয়ে ভালো জীবনযাপন সম্ভব? জেনে নিন শীর্ষ ৫ দেশ

২০২৫ সালে বসবাসের জন্য সেরা ৫ দেশ: সুযোগ, নিরাপত্তা ও সুখে এগিয়ে যারা

বিশ্ব এখন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি সংযুক্ত। প্রযুক্তি, কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষায় মানুষ নিজ দেশ ছাড়িয়ে অন্য দেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। জাতিসংঘের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে বিশ্বব্যাপী অভিবাসীর সংখ্যা প্রায় ৩০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। অর্থাৎ পৃথিবীর প্রতি ৩০ জনের একজন বাস করছে নিজ জন্মভূমির বাইরে।

বিদেশে বসবাস মানেই শুধু উন্নত জীবনের আশায় যাত্রা নয়; এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে মানসিক স্থিতি, আর্থিক নিরাপত্তা, সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা ও ব্যক্তিগত বিকাশের সুযোগ। এসব বিষয় বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনস এক্সপাট ইনসাইডার সার্ভে ২০২৫ এক জরিপে বিশ্বের সবচেয়ে বসবাসযোগ্য দেশগুলোর তালিকা প্রকাশ করেছে। ৪৬টি দেশের অভিবাসীদের অভিজ্ঞতা ও মূল্যায়নের ভিত্তিতে তৈরি এই তালিকায় উঠে এসেছে শীর্ষ ৫ দেশ—যেখানে জীবনযাত্রার মান, নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ সব মিলিয়ে বিদেশিদের জন্য এক আদর্শ ঠিকানা।

পানামা: ২০২৫ সালে অভিবাসীদের স্বপ্নের গন্তব্য

বিশ্বজুড়ে এখন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি মানুষ নিজ দেশ ছেড়ে নতুন জীবনের সন্ধানে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। বিশ্ব মাইগ্রেশন রিপোর্ট–২০২৫ অনুযায়ী, পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩ দশমিক ৬ শতাংশ বর্তমানে আন্তর্জাতিক অভিবাসী—অর্থাৎ প্রায় ২৮ কোটি মানুষ নিজের জন্মভূমির বাইরে বসবাস করছে।

বিদেশে বসবাস মানেই শুধু নতুন সুযোগ নয়, সঙ্গে আসে নানা চ্যালেঞ্জও। ভাষা, সংস্কৃতি, জীবনযাত্রার খরচ এবং মানিয়ে নেওয়ার সমস্যা—সব মিলিয়ে বিদেশি জীবনে সফল হতে প্রয়োজন সঠিক গন্তব্য নির্বাচন। আর সেই সঠিক সিদ্ধান্তে দিকনির্দেশনা দিচ্ছে ইন্টারন্যাশনস এক্সপ্যাট ইনসাইডার সার্ভে ২০২৫।

এই জরিপে বিশ্বের ৪৬টি দেশের অভিবাসীদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে বসবাসের জন্য সবচেয়ে উপযোগী দেশগুলোর তালিকা। জরিপে অংশ নিয়েছেন ১০ হাজার ৮৫ জন অভিবাসী, যেখানে প্রতিটি দেশের জন্য অন্তত ৫০ জনের মতামত নেওয়া হয়েছে। মূল্যায়ন করা হয়েছে পাঁচটি মূল মানদণ্ডে—বিদেশে কাজের সুযোগ, ব্যক্তিগত অর্থনৈতিক অবস্থা, জীবনযাত্রার মান, প্রবাসীদের জন্য সুবিধা এবং নতুন দেশে মানিয়ে নেওয়ার সক্ষমতা।

কলম্বিয়া: উষ্ণতা, সংস্কৃতি ও সাশ্রয়ী জীবনের দেশ

২০২৫ সালের এক্সপ্যাট ইনসাইডার জরিপে দ্বিতীয় স্থানে জায়গা করে নিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার প্রাণবন্ত দেশ কলম্বিয়া। সাশ্রয়ী জীবনযাত্রা, বন্ধুত্বপূর্ণ মানুষ আর বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির কারণে দেশটি এখন অভিবাসীদের কাছে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

কলম্বিয়ার অন্যতম বড় আকর্ষণ হলো এখানকার জীবনযাত্রার ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম। বড় শহর বোগোতা বা মেডেলিনেও একজন অভিবাসী মাসে গড়ে ১,০০০ থেকে ১,২০০ মার্কিন ডলারে আরামদায়কভাবে বসবাস করতে পারেন—যা ইউরোপ বা উত্তর আমেরিকার অনেক শহরের তুলনায় অর্ধেক খরচ।

জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৮০ শতাংশ অভিবাসী কলম্বিয়ায় তাদের জীবনে সন্তুষ্ট। এর পেছনে অন্যতম কারণ হলো দেশের পরিবারকেন্দ্রিক সমাজব্যবস্থা ও অতিথিপরায়ণ সংস্কৃতি। স্থানীয়রা বিদেশিদের আন্তরিকভাবে গ্রহণ করে, ফলে নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়া সহজ হয়।

কলম্বিয়া তার রঙিন সংস্কৃতি ও সংগীতের জন্যও বিখ্যাত—সালসা, কুম্বিয়া আর লাতিন নাচের ছন্দে মুখর এই দেশ যেন এক চলমান উৎসব। ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য আছে অপার সৌন্দর্যে ভরা বারিচারা গ্রাম, কফি উৎপাদন অঞ্চল, এবং কার্তাহেনার ঐতিহাসিক উপকূলীয় শহর।

দেশটির অর্থনীতি ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হচ্ছে, আর সরকারের বিনিয়োগবান্ধব নীতি অভিবাসীদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করছে। কাজের ক্ষেত্র হোক পর্যটন, শিক্ষা বা ডিজিটাল সেবা—কলম্বিয়ায় আছে সম্ভাবনার দরজা।

সব মিলিয়ে, উষ্ণ আতিথেয়তা, কম খরচে উন্নত জীবনযাত্রা ও প্রাণবন্ত সংস্কৃতি—এই তিনের মেলবন্ধনে কলম্বিয়া ২০২৫ সালে হয়ে উঠেছে অভিবাসীদের নতুন প্রিয় ঠিকানা।

 

 

মেক্সিকো: সংস্কৃতি, স্বাদ আর সাশ্রয়ী জীবনের মেলবন্ধন

২০২৫ সালের এক্সপ্যাট ইনসাইডার জরিপে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে মেক্সিকো—এক দেশ, যেখানে উষ্ণতা, রঙ ও জীবনের আনন্দ একাকার হয়ে গেছে। অতিথিপরায়ণ মানুষ, ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি, মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং কম খরচে উচ্চমানের জীবন—সব মিলিয়ে মেক্সিকো এখন অভিবাসীদের কাছে এক স্বপ্নের গন্তব্য।

দেশটির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো এখানকার সাশ্রয়ী জীবনযাপন ব্যবস্থা। রাজধানী মেক্সিকো সিটি বা জনপ্রিয় উপকূলীয় শহর প্লায়া দেল কারমেনেও একজন অভিবাসী মাসে গড়ে ১,২০০ থেকে ১,৫০০ মার্কিন ডলারে আরামদায়ক জীবনযাপন করতে পারেন। বাসস্থান, পরিবহন, খাবার—সব ক্ষেত্রেই খরচ তুলনামূলকভাবে অনেক কম, কিন্তু জীবনমান থাকে উচ্চ পর্যায়ে।

মেক্সিকোর অতিথিপরায়ণতা ও সামাজিক বন্ধন নতুনদের দ্রুত মানিয়ে নিতে সাহায্য করে। স্থানীয়রা সাধারণত বন্ধুবৎসল এবং বিদেশিদের সহজভাবে গ্রহণ করে। এখানকার সমাজব্যবস্থা পরিবারকেন্দ্রিক ও আন্তরিক, ফলে একাকিত্বের অনুভূতি তৈরি হয় না।

খাবারপ্রেমীদের কাছে মেক্সিকো এক রসনার স্বর্গ। টাকো, গুয়াকামোল, চিলি কন কার্নে, এনচিলাদা—এই দেশটির খাবার বৈচিত্র্য বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়। স্থানীয় বাজারের প্রাণবন্ত পরিবেশ, রঙিন উৎসব এবং সংগীতমুখর রাস্তাগুলো প্রতিদিনের জীবনকে করে তোলে আনন্দময়।

অভিবাসীরা পরামর্শ দেন, মেক্সিকোতে সত্যিকারের মানিয়ে নিতে হলে স্প্যানিশ ভাষা শেখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভাষা জানলে স্থানীয় সমাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং দৈনন্দিন কাজও অনেক সহজ হয়।

তাছাড়া মেক্সিকো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেও অনন্য—ক্যারিবীয় উপকূলের নীল জলরাশি, ইউকাতান উপদ্বীপের মায়া সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ, কিংবা ওয়াহাকার পাহাড়ি শহরগুলোর শান্ত সকাল—সবই একে অনন্য করে তুলেছে।

সব মিলিয়ে, অর্থনৈতিক সুবিধা, সংস্কৃতির বৈচিত্র্য, খাবারের ঐশ্বর্য ও বন্ধুত্বপূর্ণ মানুষ—এই চার গুণে মেক্সিকো ২০২৫ সালে বিশ্বব্যাপী অভিবাসীদের জন্য সবচেয়ে সুখী ও প্রাণবন্ত গন্তব্যগুলোর একটি হয়ে উঠেছে।

 

থাইল্যান্ড: অতিথিপরায়ণ মানুষ ও প্রশান্ত জীবনের ঠিকানা

২০২৫ সালের এক্সপ্যাট ইনসাইডার জরিপে চতুর্থ স্থানে জায়গা করে নিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রঙিন ও প্রাণবন্ত দেশ থাইল্যান্ড। সাশ্রয়ী জীবনযাপন, অতিথিপরায়ণ মানুষ, উষ্ণ জলবায়ু এবং মনোমুগ্ধকর সৈকতের কারণে থাইল্যান্ড দীর্ঘদিন ধরেই প্রবাসীদের কাছে প্রিয় গন্তব্য।

দেশটির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো এখানকার সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবনযাত্রা। রাজধানী ব্যাংককের ব্যস্ততা কিংবা উত্তরাঞ্চলের শান্ত শহর চিয়াং মাই—দুই জায়গাতেই আধুনিক জীবনযাপনের সব সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। ফুকেট ও ক্রাবির মতো উপকূলীয় অঞ্চল আবার শান্তিপ্রেমী ও অবসরপ্রাপ্ত প্রবাসীদের জন্য স্বর্গ।

থাইল্যান্ডে জীবনযাত্রার ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম। মাসে গড়ে ১,০০০ থেকে ১,৪০০ মার্কিন ডলার ব্যয়ে একজন একক প্রবাসী আরামদায়কভাবে বাস করতে পারেন। খাবার, বাসা ভাড়া, যাতায়াত—সবকিছুই সাশ্রয়ী। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত, এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলো আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন।

থাইল্যান্ডের মানুষ পরিচিত তাদের আতিথেয়তা ও বিনয়ী স্বভাবের জন্য। স্থানীয়রা বিদেশিদের সহজভাবে গ্রহণ করে, এবং সমাজে মিশে যেতে সহায়তা করে। এখানকার মানুষ সাধারণত “সাবাই-সাবাই” দর্শনে বিশ্বাসী—অর্থাৎ জীবনকে ধীর, প্রশান্ত ও উপভোগ্যভাবে কাটানোই মূল লক্ষ্য।

দেশটিতে বসবাস করতে হলে স্থানীয় সংস্কৃতি, ধর্মীয় অনুশাসন ও সামাজিক নিয়ম বোঝা জরুরি। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এই জাতি সম্মান ও শিষ্টাচারকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। তাই স্থানীয় সংস্কৃতির প্রতি সম্মান দেখাতে পারলে থাইল্যান্ডে জীবন অনেক বেশি সুখকর হয়ে ওঠে।

এ ছাড়া থাইল্যান্ড পর্যটনের জন্যও বিখ্যাত—ব্যাংককের নৈশবাজার, ফুকেটের সোনালি সৈকত, আয়ুথায়ার ঐতিহাসিক মন্দির আর চিয়াং মাইয়ের পর্বতঘেরা দৃশ্য অভিবাসী ও ভ্রমণকারীদের মুগ্ধ করে রাখে।

সব মিলিয়ে, সাশ্রয়ী জীবনযাপন, নিরাপদ পরিবেশ, অতিথিপরায়ণ মানুষ ও উন্নত অবকাঠামো—এই সবকিছুর সমন্বয়ে থাইল্যান্ড ২০২৫ সালে বিদেশে বসবাসের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় গন্তব্যগুলোর একটি হয়ে উঠেছে।

 

ভিয়েতনাম: দ্রুত উন্নয়নশীল অর্থনীতি ও প্রবাসবান্ধব জীবন

২০২৫ সালের তালিকায় পঞ্চম স্থানে থাকা ভিয়েতনাম বর্তমানে প্রবাসীদের জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম আকর্ষণীয় দেশ। গত এক দশকে দেশটির অর্থনীতি যে গতিতে এগিয়েছে, তা অনেক উন্নয়নশীল দেশের জন্য উদাহরণ হয়ে উঠেছে। প্রযুক্তি, উৎপাদন ও পর্যটন খাতে দ্রুত অগ্রগতির ফলে এখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়েছে, যা বিদেশিদের কাছে ভিয়েতনামকে আরও জনপ্রিয় করেছে।

ভিয়েতনামে জীবনযাত্রার ব্যয় তুলনামূলকভাবে খুবই সাশ্রয়ী। মাসিক খরচ পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় প্রায় অর্ধেক। বাসা ভাড়া, খাবার ও পরিবহন—সব কিছুই নাগালের মধ্যে। এ কারণে অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি, ফ্রিল্যান্সার ও ডিজিটাল নোম্যাডদের কাছে দেশটি বিশেষ পছন্দের।

দেশটির বড় শহরগুলো—হানোয়, দা নাং ও হো চি মিন সিটি—প্রবাসীদের বসবাসের জন্য উপযোগী। আধুনিক অবকাঠামো, দ্রুত ইন্টারনেট, উন্নত স্বাস্থ্যসেবা ও আন্তর্জাতিক বিদ্যালয়—সবই এখানে সহজলভ্য। একই সঙ্গে শহরের রাস্তায় এখনো টের পাওয়া যায় পুরোনো ফরাসি স্থাপত্য ও ঐতিহ্যবাহী বাজারের মেলবন্ধন।

ভিয়েতনামের মানুষ সহজ-সরল, পরিশ্রমী ও অতিথিপরায়ণ। স্থানীয়রা বিদেশিদের প্রতি সহযোগিতামূলক মনোভাব পোষণ করে, যা সমাজে দ্রুত মিশে যেতে সাহায্য করে। ইংরেজি না জানলেও তারা হাসিমুখে যোগাযোগের চেষ্টা করেন—এই আন্তরিকতা প্রবাসীদের কাছে বড় স্বস্তির জায়গা।

খাদ্যপ্রেমীদের জন্য ভিয়েতনাম যেন এক স্বর্গ। বুন চা, ফো নুডলস ও ঐতিহ্যবাহী ভিয়েতনামিজ কফি—এসব খাবার বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়। দেশটির ক্যাফে সংস্কৃতি এতটাই শক্তিশালী যে, প্রায় প্রতিটি কোণায় একটি ছোট কফিশপ দেখা যায়।

সব মিলিয়ে, দ্রুত বেড়ে ওঠা অর্থনীতি, জীবনযাপনের সহজতা, নিরাপদ পরিবেশ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সমাজব্যবস্থা—এই সব কিছুর কারণে ভিয়েতনাম ২০২৫ সালে প্রবাসীদের জন্য সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল গন্তব্যগুলোর একটি হয়ে উঠেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *