আম খেয়ে ওজন বাড়ে না—সঠিক নিয়ম জানলেই উপকার!
গ্রীষ্ম মানেই আমের মৌসুম। চারপাশে যখন পাকা আমের ঘ্রাণ, তখন নিজেকে সামলে রাখা সত্যিই কঠিন। কিন্তু ওজন কমাতে চাইলে কিংবা ডায়াবেটিসে ভুগলে কি এই মিষ্টি ফলে হাত দেওয়া যাবে না?
অনেকেই ভাবেন, আম খেলেই রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যাবে বা ওজন বাড়বে। তাই ডায়েটের সময় এই ফলটি একেবারে বাদ দিয়ে দেন অনেকে। কিন্তু পুষ্টিবিদরা বলছেন, বিষয়টা এতটা একপেশে নয়। বরং পরিমাণমতো ও সঠিক সময়ে আম খেলে তা শরীরের উপকারেই আসে।
আমে আছে স্বাস্থ্যকর প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদান
আমকে বলা হয় ‘ফলের রাজা’—শুধু স্বাদের জন্য নয়, বরং পুষ্টিগুণেও সে রাজকীয়। এতে রয়েছে—
ভিটামিন A, C, E, K
ফোলেট (ভিটামিন B9)
পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ফসফরাস
ফাইবার ও প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট
এসব উপাদান রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়, হজমে সাহায্য করে এবং ত্বক ও চোখের জন্যও ভালো।
ওজন কমাতে চাইলে আম খেতে পারবেন?
পুষ্টিবিদদের মতে, একদম পারবেন। তবে মাথায় রাখতে হবে কয়েকটি বিষয়—
পরিমাণ: দিনে ১টি মাঝারি আম যথেষ্ট। তিন-চারটি আম একসঙ্গে খেলে বিপদ হতে পারে।
সময়: দুপুরে ভাত-রুটি খাওয়ার পর নয়। বরং সকাল বা সন্ধ্যায় হালকা স্ন্যাক্স হিসেবে খেলে ভালো।
ক্যালোরি হিসাব: ১০০ গ্রাম আমে প্রায় ৬০–৬৫ ক্যালোরি থাকে। ২৫০ গ্রাম আমে ১৫০ ক্যালোরির মতো। ডায়েটে জায়গা করে নিলে চিন্তার কিছু নেই।
ডায়াবেটিস রোগীরা কী করবেন?
অনেকে মনে করেন ডায়াবেটিস থাকলে আম একেবারেই নিষিদ্ধ। পুষ্টিবিদ অনন্যা ভৌমিক বলছেন, “একটা আম স্ন্যাক হিসেবে খাওয়া যাবে, তবে নিয়ম মেনে। রুটিন খাবারের সঙ্গে না খাওয়াই ভালো।”
যেহেতু আমের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তুলনামূলক বেশি, তাই খাওয়ার সময় রক্তে শর্করার প্রভাব কমানোর কৌশল হিসেবে আলাদা করে সময় নির্ধারণ জরুরি।
ওজন কমানোর জন্য ক্যালোরি ব্যালান্সই মূল চাবিকাঠি
ওজন বাড়বে কি কমবে তা নির্ভর করে আপনি দিনে কত ক্যালোরি খাচ্ছেন ও কতটা খরচ করছেন তার ওপর। আম খাওয়া যদি সেই হিসাবের মধ্যে থাকে, তাহলে এটি বাদ দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। বরং এতে দ্রুত শক্তি আসে, পেট ভরে এবং মিষ্টির ইচ্ছাও মেটে।
শেষ কথা
আম খেলে ওজন বেড়ে যাবে—এমন ধারণা ভুল। বরং সঠিক পরিমাণ ও উপযুক্ত সময়ে খেলে আম হতে পারে আপনার ডায়েটেরও অংশ। কাজেই গরমের এই আমের মৌসুমে দোষ না দিয়ে বরং জেনে-বুঝে উপভোগ করুন ফলের রাজাকে!