গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পেতে মেনে চলুন এই ৫টি অভ্যাস

গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি পেতে মেনে চলুন এই ৫টি অভ্যাস

গ্যাস্ট্রিক নয়, চাই স্বস্তি: অভ্যাসে বদল আনলেই মিলবে উপশম

প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই গ্যাসের ওষুধ খান? এমন অভ্যাস অনেকেরই। প্রথমে সাময়িক স্বস্তি মিললেও নিয়মিত এমন ওষুধ সেবনে শরীরে তৈরি হতে পারে আয়রনের ঘাটতি। শুধু তা-ই নয়, বদহজম, দুর্বলতা, এমনকি অন্যান্য রোগের ঝুঁকিও বাড়ে। অথচ কিছু সাধারণ অভ্যাসে পরিবর্তন এনে আপনি চাইলেই এড়াতে পারেন এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতি।

সময়মতো ঘুম, সময়মতো খাবার
রাতে দেরি করে ঘুমানো বা সকালে দেরিতে ঘুম থেকে ওঠার সঙ্গে অ্যাসিডিটির যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে, সেটা অনেকেই জানেন না। দেরিতে ঘুমালে রাতের ক্ষুধা বেড়ে যায়, মাঝরাতে খাওয়ার প্রবণতাও বাড়ে। আবার সকালে দেরিতে ঘুমিয়ে নাশতা না করলে পেট অনেকক্ষণ খালি থাকে—দুই অবস্থাতেই অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গিয়ে গ্যাস্ট্রিক হতে পারে। তাই নিয়মমাফিক ঘুম ও খাবারের অভ্যাস গড়ে তুলুন।

মানসিক চাপ আর নয়
স্ট্রেস বা মানসিক চাপ শরীরে অ্যাসিড নিঃসরণ বাড়িয়ে তোলে। অফিসের চাপ, পারিবারিক দুশ্চিন্তা কিংবা একাকিত্ব—সবই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়াতে পারে। প্রতিদিন অন্তত ২০ মিনিট সময় দিন নিজের জন্য। যোগব্যায়াম, ধ্যান কিংবা হালকা শরীরচর্চা মানসিক স্বস্তি দেয়, কমায় অ্যাসিডিটির ঝুঁকি।

শরীরচর্চার অভ্যাস করুন
বসে থাকা জীবনযাপন শুধু ওজনই বাড়ায় না, হজমের কার্যক্রমও ধীর করে দেয়। হালকা হাঁটা, কিছুটা কায়িক পরিশ্রম বা সকালের হাঁটাচলা হজম শক্তি বাড়ায় এবং গ্যাস্ট্রিকের প্রকোপ কমায়। দিনে অন্তত আধাঘণ্টা সময় রাখুন শরীরচর্চার জন্য।

খাওয়ার পর কী করবেন, কী নয়
খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুয়ে পড়া, কিংবা ভারী ব্যায়াম করা—দুই-ই অ্যাসিড রিফ্লাক্সের কারণ হতে পারে। খাওয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা পর ভারী ব্যায়াম করুন এবং তিন ঘণ্টা পর শুতে যান। তবে হালকা হাঁটা খাওয়ার পর ভালো অভ্যাস।

কী খাবেন, কী এড়াবেন
এড়িয়ে চলুন: অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার, টকজাতীয় ফল (যেমন কাঁচা আম, লেবু), কেচাপ, ভিনেগার, চকলেট, চা-কফি, কোমল পানীয় ও দুধজাত কিছু খাবার।

সতর্ক থাকুন: আঁশযুক্ত খাবার যেমন স্বাস্থ্যকর, তেমনই বেশি খেলে হজমে সমস্যা হতে পারে—পরিমিত মাত্রায় খাওয়া জরুরি।

খাবেন: কলা, ওটস, সেদ্ধ সবজি, পানসে ফল, আদা চা, ক্যামোমিল চা—এই খাবারগুলো পেট ঠান্ডা রাখতে সহায়ক।

পানির সঠিক ব্যবহার
অনেকে খাবারের সঙ্গে পানি খান, যা হজমে বিঘ্ন ঘটাতে পারে। খাবারের আগে বা পরে ১৫-২০ মিনিট ব্যবধান রেখে পানি খান। দিনে ৭–৮ গ্লাস পানি পান করুন, তবে ধীরে ধীরে, চুমুক দিয়ে।

ধীরে খান, বুঝে খান
খাবার সময় তাড়াহুড়া করবেন না। ভালোভাবে চিবিয়ে খেলে হজম সহজ হয়, অ্যাসিড কম তৈরি হয়। দীর্ঘ সময় পেটে কিছু না রাখার অভ্যাস পরিহার করুন। একসঙ্গে বেশি খাওয়ার বদলে ভাগ করে খান।

শেষ কথা:
গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির সমস্যা ওষুধে সাময়িক উপশম পেলেও স্থায়ী সমাধান আসে জীবনধারার পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে। সময়মতো ঘুম, পরিমিত খাবার, কিছু চলাফেরা—এই অভ্যাসগুলো আপনাকে এনে দিতে পারে আরামের দিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *