জোরে নাক ঝাড়লে হতে পারে গুরুতর ক্ষতি
সর্দি-কাশির সময় নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক বিষয়। তখন অনেকেই আরাম পেতে জোরে নাক ঝাড়েন বা নাক টেনে পরিষ্কার করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ অভ্যাস একেবারেই নিরাপদ নয়। বরং এতে নাকের পাশাপাশি কানেরও মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
নাক ঝাড়লে কী হয়?
ঠান্ডা লাগলে শরীর প্রতিদিন এক থেকে দুই লিটার মিউকাস বা শ্লেষ্মা উৎপাদন করে। এ মিউকাস আসলে শরীরের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। এটি ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াকে আটকে দেয় এবং হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেয়। কিন্তু যখন আপনি জোরে নাক ঝাড়েন, তখন সেই মিউকাস ভুল দিকে সরে গিয়ে সাইনাসের ভেতর বা কানের মধ্যখানে প্রবেশ করতে পারে।
এর ফলে কী কী সমস্যা হতে পারে?
সাইনাস ইনফেকশন: মিউকাস সাইনাসে আটকে গিয়ে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
কানে ব্যথা ও সংক্রমণ: জীবাণু কানের মধ্যে প্রবেশ করলে কানের ভেতরে প্রদাহ সৃষ্টি হয়।
কানের পর্দা ফেটে যাওয়া: অতিরিক্ত চাপের কারণে কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
নাক দিয়ে রক্ত পড়া: শ্লেষ্মা ঝাড়তে গিয়ে নাকের ভেতরের সূক্ষ্ম রক্তনালী ছিঁড়ে যেতে পারে।
দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা: শরীরের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ায় দ্রুত সুস্থ হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
সঠিকভাবে নাক পরিষ্কারের উপায়
একসঙ্গে দুই নাসারন্ধ্র না ঝেড়ে একবারে একটি নাসারন্ধ্র পরিষ্কার করুন।
খুব জোরে নয়, হালকাভাবে নাক ঝাড়ুন।
প্রয়োজনে নাকে স্যালাইন ওয়াটার (লবণপানি) ব্যবহার করুন।
বারবার নাক মুছতে নরম টিস্যু ব্যবহার করুন।
ঠান্ডা লাগলে পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং বিশ্রাম নিন।
সংক্ষেপে বলা যায়, জোরে নাক ঝাড়া সাময়িক আরাম দিলেও দীর্ঘমেয়াদে বড় ধরনের ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। তাই সচেতনভাবে নাক পরিষ্কার করা এবং সঠিক অভ্যাস গড়ে তোলাই হলো সেরা উপায়।