নাসার ২০% কর্মী বিদায় নিচ্ছেন, বাজেট কাটছাঁটেই বিপর্যয়
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এক বড় ধরনের সংকটের মুখে। সংস্থাটির প্রায় ২০ শতাংশ কর্মী, অর্থাৎ প্রায় ৩ হাজার ৮৭০ জন, শিগগিরই চাকরি ছাড়তে যাচ্ছেন বলে নিশ্চিত করেছে নাসার একজন মুখপাত্র। এ সংখ্যা আরও বাড়তে বা কমতে পারে বলে জানানো হয়েছে। কর্মীদের বিদায়ের পর নাসায় কর্মরত জনবল কমে দাঁড়াবে আনুমানিক ১৪ হাজারে।
ইলন মাস্ক ও বাজেট সংকোচনের প্রভাব
বহুল আলোচিত এই ছাঁটাইয়ের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছেন ট্রাম্প প্রশাসনের সাবেক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ইলন মাস্ক। সরকারি ব্যয় কমাতে গঠিত ‘গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি ডিপার্টমেন্ট’-এ থাকার সময় তিনি প্রায় ২ হাজার ৬০০ কর্মী ছাঁটাইয়ের সুপারিশ করেন। পরবর্তীতে তিনিও ওই পদ থেকে সরে দাঁড়ান।
এদিকে ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর নাসার বাজেট থেকে ১২ কোটি ডলারের অনুদান বাতিল করা হয়েছে। পরবর্তী অর্থবছরে নাসার বাজেটের ২৫% হ্রাস করার প্রস্তাব রয়েছে। এতে করে ২০২৬ সালের মধ্যে বিজ্ঞান গবেষণা খাতে বাজেট অর্ধেক কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নেতৃত্ব ও নীতিতে প্রশ্ন
এই সংকটের মুখে সম্প্রতি চারজন মহাকাশচারীসহ নাসার বর্তমান ও সাবেক ৩০০ কর্মী সংস্থার অন্তর্বর্তী প্রধান শন ডাফিকে একটি খোলাচিঠি দিয়েছেন। ডাফি ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ এবং বর্তমানে পরিবহনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
চিঠিটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অল্প সময়ের মধ্যে যেভাবে হঠাৎ পরিবর্তন আনা হয়েছে, তা নাসার মিশন ও নিরাপত্তাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে। ‘দ্য ভয়েজার ডিক্লারেশন’ শিরোনামে এই চিঠিটি উৎসর্গ করা হয়েছে নাসার অতীতে প্রাণ হারানো ১৭ জন নভোচারীকে।
চিঠির ভাষ্য অনুযায়ী, “বাজেট কাটছাঁট, কর্মী হ্রাস এবং মিশন বাতিল—সব মিলে নাসা এখন অনিশ্চয়তার এক কঠিন সময় পার করছে।” তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, এসব সিদ্ধান্ত শুধু মহাকাশ গবেষণায় নয়, পুরো যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও বৈজ্ঞানিক অগ্রগতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
সংক্ষেপে বললে:
নাসা এখন এক যুগান্তকারী চাপের মধ্যে আছে—কর্মী সংকোচন, বাজেট হ্রাস, নেতৃত্বে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ—সব মিলিয়ে ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো: “বিজ্ঞান নয়, তবে কি রাজনীতিই নেতৃত্ব দিচ্ছে নাসাকে?”